ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের লক্ষণ

ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের লক্ষণ নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

ছাগলের পাতলা পায়খানা

১. মল ত্যাগের ধরন পরিবর্তন: মল স্বাভাবিকের তুলনায় পানির মতো বা অত্যন্ত নরম হয়ে যায়।
২. মলের রঙ পরিবর্তন: মলের রঙ সবুজ, কালো বা হলুদ হতে পারে, যা খাদ্য গ্রহণ বা সংক্রমণের ওপর নির্ভর করে।
৩. মলের দুর্গন্ধ: স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তীব্র এবং অস্বাভাবিক দুর্গন্ধযুক্ত মল ত্যাগ করে।
৪. মল ত্যাগের পরিমাণ বৃদ্ধি: বারবার এবং অল্প অল্প করে মল ত্যাগ করার প্রবণতা দেখা যায়।
৫. পেটের অস্বস্তি: পেট ফাঁপা বা ব্যথার কারণে ছাগল অস্থির হতে পারে।
৬. অবসন্নতা: ছাগল দুর্বল ও ক্লান্ত দেখায়, চলাফেরায় অলসতা আসে।
৭. ক্ষুধামন্দা: খাদ্যে অনীহা দেখা যায়, খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়।
৮. ওজন হ্রাস: দীর্ঘমেয়াদে পাতলা পায়খানার কারণে ওজন কমতে থাকে।
৯. ডিহাইড্রেশন: শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হওয়ায় চামড়া শুকনো ও চেপে ধরলে সহজে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে দেরি হয়।
১০. চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস: পানি শূন্যতার কারণে চামড়া ঢিলা হয়ে যায়।
১১. চোখের দৃষ্টি নিষ্প্রভ: চোখের চারপাশ ফাঁপা এবং দৃষ্টি মলিন হতে পারে।
১২. শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বৃদ্ধি: ডিহাইড্রেশন এবং দুর্বলতার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়।
১৩. জিহ্বা ও মুখের শুষ্কতা: পানিশূন্যতার কারণে জিহ্বা ও মুখের ভেতর শুকনো হয়ে যায়।
১৪. অতিরিক্ত পানির তৃষ্ণা: ডিহাইড্রেশন কাটানোর জন্য ছাগল বেশি পানি পান করতে চায়।
১৫. মলের সাথে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ মিশ্রণ: কখনও কখনও মলের সাথে রক্ত, শ্লেষ্মা বা অজানা পদার্থ দেখা যায়।
১৬. অস্থিরতা ও বিরক্তিভাব: অস্বস্তির কারণে ছাগল অস্থির ও বিরক্তি প্রকাশ করতে পারে।
১৭. শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা হ্রাস: সংক্রমণজনিত কারণে জ্বর বা কখনো তাপমাত্রা কমে যেতে পারে।
১৮. চামড়া ও পশমের অবস্থার অবনতি: পুষ্টিহীনতার কারণে চামড়া রুক্ষ হয়ে যায় এবং পশম ঝরে পড়তে পারে।
১৯. খাদ্য হজমের সমস্যা: পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক শব্দ হতে পারে এবং খাদ্য হজমে সমস্যা দেখা যায়।
২০. পুষ্টির অভাব: দীর্ঘস্থায়ী পাতলা পায়খানার ফলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ বাধাগ্রস্ত হয়।
২১. শরীরের শক্তি হ্রাস: শক্তির অভাবে ছাগল চলাফেরা ও দৈনন্দিন কাজে অক্ষম হয়ে পড়ে।
২২. অতিরিক্ত বাতাস ত্যাগ: পাকস্থলীতে গ্যাস জমে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত বাতাস ত্যাগ করে।
২৩. সংক্রমণের লক্ষণ: সংক্রমণের কারণে পায়খানার সঙ্গে দুর্গন্ধযুক্ত মিউকাস বা রক্ত দেখা যেতে পারে।
২৪. পরিপাকতন্ত্রের অস্বাভাবিকতা: পরিপাকতন্ত্রের নড়াচড়া বেড়ে যায় অথবা অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে।
২৫. মৃত্যুর ঝুঁকি: যদি সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না হয় তবে দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ছাগলের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

এগুলো ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের প্রধান লক্ষণ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান করলে ছাগল দ্রুত সেরে উঠতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

হাঁস কত দিনে ডিম পাড়ে এবং ডিম পাড়া হাঁসের সঠিক পরিচর্যা

ফাউমি মুরগি পালন পদ্ধতি ও প্রাথমিক চিকিৎসা

মাংস উৎপাদনের জন্য লাভজনক হাঁসের জাত ও তাদের পালন পদ্ধতি